বাউফলে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু

বাউফলে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু

দেলোয়ার হোসেন, বাউফল ঃ পটুয়াখালীর বাউফলে মাজেদা মেমোরিয়াল ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় আবারও মোসা. লিমা আক্তার (২২) নামে এক প্রসূতি নারীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।  শনিবার ( ২৬ আগষ্ট) রাত আনুমানিক ৭টার দিকে  উপজেলার কালিশুরী বন্দরে ওই  ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনকালে ওই নারীর মৃত্যু হয় । নিহত লিমা আক্তার উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নের চাঁদকাঠি গ্রামের মো. আইউব আলীর মেয়ে। বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের লক্ষীবর্ধণ গ্রামের মো. কালাম খানের স্ত্রী ।
এর আগে ২০২০ সালে ভুল চিকিৎসায় একই ক্লিনিকে হ্যাপী বেগম (২৪) নামের  এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছিল। পরে মোটা অংকের টাকার বিনিয়ম সমঝোতা করে মাজেদা ক্লিনিক।
নিহত প্রসূতি নারী লিমার স্বজনেরা জানান, সকালে লিমার প্রসব বেদনা ওঠে। বেলা সাড়ে ১২টা দিকে মাজেদা ক্লিনিকে নিয়ে আসা হয়। বিকেল চারটার দিকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানায় লিমার সিজারিয়ান অপারেশন করতে হবে। নিদিষ্ট টাকা চুক্তিতে বিকেল ৫টার  দিকে লিমাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সিজারে কন্যা সন্তান জন্ম দেন লিমা। দীর্ঘ সময় পার হলেও লিমার জ্ঞান ফিরে আসেনি। অপারেশন থিয়েটারেই লিমার মৃত্যু হয়।  স্বজনেরা বিষয়টি টের পেলেও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানায় রোগী সুস্থ্য আছে।  উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠাতে হবে। ক্লিনিকের লোকজন তড়িঘড়ি করে লিমাকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেয়। লিমার স্বজনেরা বরিশাল না গিয়ে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক লিমাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. সোয়েব মাহমুদ  জানান, কখন মারা গেছে তা বলতে পারব না। তবে হাসপাতালে মৃত নিয়ে আসা হয়েছে।
নিহতর মা মো. আমেনা বেগম বলেন, ক্লিনিকের মধ্যেই আমার মেয়ে মারা যায়। তারা মরা মেয়েকে সেলাইন দিয়ে বরিশাল নিয়ে যেতে বলে। আমরা বরিশাল না নিয়ে বাউফল নিয়ে আসছি।  ডাক্তার দেখে বলছে আগেই মারা গেছে।
এবিষয়ে মাজেদা ক্লিনিক  কর্তৃপক্ষের কারো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর গা ঢাকা দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
 উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, তদন্ত করে সত্য ঘটনা উদঘাটন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সত্য প্রমানিত হলে অভিযুক্ত ক্লিনিকটি বন্ধের সুপারিশ করবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজী বলেন, মাজেদা ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশন করার সক্ষমতা আছে কিনা দেখতে হবে এবং যে ডাক্তার অপারেশন করেছেন তার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এবিষয়ে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এটিএম আরিচুল হক বলেন, এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।